নাহিদুজ্জামান, শিবগঞ্জ : কিশোর বয়সে দুরারোধ্য ব্যাধিতে দুই পা কেটে ফেলার পরামর্শ চিকিৎসকরা। এতে দুই পা হারান চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের হঠাৎপাড়া গ্রামের জেন্টু মিয়া (৭০)। এরপর ভ্যানে করে পথে-ঘাটে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন তিনি। কিন্তু গত ১৭ অক্টোবর রাতে নিজের শেষ সম্বল ভ্যানটি বাড়ি থেকে চুরি হয়। সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন দুই পা হারানো ভিক্ষুক জেন্টু মিয়া। ভ্যান হারিয়ে বেকায়দায় পড়ে যান তিনি। এমনজি বন্ধ হয়ে যায় ভিক্ষাবৃত্তি। তবে ভ্যান হারানোর ৬ দিন পর ভিক্ষুক জেন্টু মিয়া পেয়েছেন নতুন ভ্যান। সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে তাকে একটি নতুন ভ্যান প্রদান করেন শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হায়াত। চুরি হওয়ার পর নতুন ভ্যান পেয়ে উচ্ছ্বসিত ভিক্ষুক জেন্টু মিয়া। তিনি বলেন, ছোটতেই নিজের দুই পা হারিয়েছি। এরপর ভ্যানে করে আশেপাশের গ্রামে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু হঠাৎ করেই কয়েকদিন আগে রাতের অন্ধকারে আমার ভ্যানটি চুরি হয়ে যায়। যেহেতু আমার দুই ওা নাই, তাই ভ্যানই একমাত্র ভরসা। ভ্যান ছাড়া চলতে পারি না। হারানোর পর ভিক্ষা করাও বন্ধ হয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, এমন কষ্টের মধ্যে ইউএনও স্যারকে পাশে পেয়ে আমার খুব ভালো লাগছে। নতুন ভ্যান দিয়ে আমি অনেক খুশি হয়েছে। এছাড়াও আমার ভ্যান চুরি হওয়ার পর করুন অবস্থা নিয়ে সাংবাদিক নাহিদ উজ্জামান সংবাদ প্রকাশ করেছে। এছাড়াও আমাকে বাড়ি থেকে এনে ভ্যান পেতে সহযোগিতা করেছে। এমনকি আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন তিনি।
এদিকে, ইউএনওর এমন মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাকে সম্মাননা জানিয়েছেন দৈনিক বাংলাদেশের সমাচার প্রত্রিকার শিবগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক নাহিদ উজ্জামান।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হায়াত জানান, সপ্তাহখানেক আগে দুই পা হারানো এক ভিক্ষুকের একমাত্র সম্বল হস্তচালিত একটি ভ্যান হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে তা আমাদের নজরে আসে। এরপর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি নতুন ভ্যান তৈরি করে তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি এমন অসহায় দু:স্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান ইউএনও।